মিথেন (CH4) উৎস
জৈব যৌগের মধ্যে সরলতম জৈব মিথেন। 1857 সালে বিজ্ঞানী বার্থেলো পরীক্ষাগারে সর্বপ্রথম কার্বন ও হাইড্রোজেন থেকে মিথেন নামে জৈব যৌগ তৈরি করেন। মিথেনের একটি অনু একটি কার্বন পরমাণু এবং চারটি হাইড্রোজেন পরমাণু যুক্ত হয়ে গঠিত হয়। এটি অ্যালকেন বা প্যারাফিন সমগোত্র শ্রেণীর প্রথম যৌগ। মিথেন একটি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
১. পেট্রোলিয়াম খনি থেকে নির্গত প্রাকৃতিক গ্যাসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে CH4 উৎপন্ন হয় (প্রায় 85 শতাংশ)।
২. কোল গ্যাসের আয়তন হিসেবে প্রায় 40% মিথেন থাকে।
৩. জলাভূমিতে গাছপালা পৌঁছে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয় এই জন্য একে মার্স গ্যাস বলে। মার্স গ্যাসের মধ্যে হাইড্রোজেন ফসফাইড (ফাসফিন এবং ফসফরাস ডাই হাইড্রাইড) মিশে থাকে। বায়ুর সংস্পর্শে এলেই ফাসফিন গ্যাস নিজে থেকে জ্বলে ওঠে এবং মার্স গ্যাসেও আগুন ধরে যায়। একেই আমরা আলেয়া বলে থাকি। আলেয়া কোন ভৌতিক বিষয় নয়।
৪. কয়লা খনির গ্যাসেও মিথেন থাকে। এই গ্যাস দাহ্য বলে কয়লা খনিতে মাঝেমাঝে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণসহ অগ্নিকাণ্ড হয়। buy legal oxymetholone in australia CH4+2O2=CO2+2H2O
৫. পরীক্ষাগারে সোডিয়াম অ্যাসিটেট ও সোডা-লাইমের মিশ্রণকে উত্তপ্ত করলে CH4 পাওয়া যায়। CH3COONa+NaOH=CH4+Na2CO3
মিথেন গ্যাসের ধর্ম
১. মিথেন সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন শ্রেণীর সরলতম যৌগ।
২. এটি একটি অ্যালিফেটিক হাইড্রোকার্বন।
৩. মিথেন একটি বর্ণহীন গন্ধহীন স্বাদহীন গ্যাস।
৪. এই গ্যাস বায়ুর চেয়ে হালকা এবং জলে সামান্য পরিমাণে দ্রাব্য।
৫. বর্তমান সময়ে জ্বালানি হিসেবে যে গোবর গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে তার প্রধান উপাদান হলো মিথেন।
৬. বায়ুর সংস্পর্শে এলে এই গ্যাস জ্বলতে থাকে।
মিথেনের ব্যবহার
১. মিথেন গ্যাস জ্বালানি রূপে ব্যবহৃত হয়। 1 ঘনফুট মিথেন গ্যাস পোড়ালে প্রায় 1000 B. Th. U তাপ উৎপন্ন হয়।
২. CH4 ও স্টিমের মিশ্রণকে 360°C উষ্ণতায় উত্তপ্ত নিকেল অনুঘটকের উপর দিয়ে চালনা করলে কার্বন-মনোক্সাইড ও হাইড্রোজেন উৎপন্ন হয়। CH4+H2O=CO+3H2
৩. হাইড্রোজেন গ্যাসের শিল্প উৎপাদনে বা বিভিন্ন রকম পণ্য উৎপাদনে CH4 গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৪. CH4 থেকে অ্যাসিটিলিন গ্যাস উৎপাদন করা হয়।
৫. CH4 থেকে মিথাইল অ্যালকোহল, ফরমালডিহাইড প্রস্তুত করা হয়। CH4 এবং অক্সিজেনের মিশ্রণকে 100 বায়ুমণ্ডল চাপে 200°C উষ্ণতায় উত্তপ্ত কপালের উপর দিয়ে চালনা করে মিথাইল অ্যালকোহল প্রস্তুত করা হয়। 2CH4+O2=2CH3OH
৬. মিথেনকে কম বায়ুতে অসম্পূর্ণ দহনে কার্বন ব্ল্যাক উৎপন্ন হয়। কার্বন ব্ল্যাককে রবার, পেন্ট, প্লাস্টিক শিল্পে এবং গ্রামোফোন রেকর্ড, ছাপার কালি, জুতার কালি প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
7. সার প্রস্তুতিতে মিথেন ব্যবহার করা হয়।
মিথেন সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর
ডাইক্লোরো মিথেনের সংকেত
ডাইক্লোরো মিথেনের সংকেত হল CH2Cl2
মিথেন হাইড্রেট এর সংকেত
মিথেন হাইড্রেট এর সংকেত CH6O
সুইট গ্যাস কি?
মিথেনকে সুইট গ্যাস বলা হয় কেন?
যেসব প্রাকৃতিক গ্যাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হাইড্রোজেন সালফাইড থাকে না, তাদেরকে মিষ্টি গ্যাস বা সুইট গ্যাস বলে। মিথেনের মধ্যে হাইড্রোজেন সালফাইড থাকেনা বরং কিছুটা পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড থাকে, তাই মিথেনকে সুইট গ্যাস বা মিষ্টি গ্যাস বলা হয়।
মিথেনের সংকেত বা ফর্মুলা কি
মিথেনের সংকেত বা ফর্মুলা হল CH4
বায়োগ্যাসে মিথেনের পরিমাণ কত
দিনদিন বায়োগ্যাস মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় হচ্ছে। এই গ্যাস মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় শক্তির আধার হয়ে উঠছে। এর মূল উপাদান গুলির মধ্যে মিথেন একটি অন্যতম উপাদান। বায়োগ্যাসের মধ্যে 55% থেকে 65% মিথেন গ্যাস থাকে।
মিথেন অনুর আকৃতি
মিথেন একটি কার্বন পরমাণু এবং চারটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত হয়। র সংকেত বা ফর্মুলা হল CH4। নীচের ছবিটিতে মিথেনের স্ট্রাকচার দেওয়া হল।
১ কেজি মিথেন পোড়ালে কত কেজি বাতাসের প্রয়োজন হয়?
১ কেজি মিথেন পোড়াতে ৪ কেজি অক্সিজেন প্রয়োজন হয়