সেন্ট্রোজোম গুরুত্ব ভূমিকা কাজ ও গঠন | সেন্ট্রিওল

0
2188

সেন্ট্রোজোম ঃ গুরুত্ব ভূমিকা কাজ গঠন ও সেন্ট্রিওল

অধিকাংশ কোষেই মাইক্রোটিউবিউল গুলি একটি কেন্দ্রীয় অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে বাইরের দিকে বিস্তৃত হয়। এই কেন্দ্রটিকে মাইক্রোটিউবিউল সংগঠন কেন্দ্র বা মাইক্রোটিউবিউল অর্গানাইজিং সেন্টার বলে। প্রাণী কোষে প্রধান মাইক্রোটিউবিউল অর্গানাইজিং সেন্টারের নাম সেন্ট্রোজোম ।

সেন্ট্রোজোম কাকে বলে

সকল প্রাণী কোষ এবং কিছু উদ্ভিদ কোষের সাইটোপ্লাজম তরলের মধ্যে নিউক্লিয়াসের পাশে অবস্থিত পর্দাবিহীন তারকা আকৃতির কোষীয় অঙ্গাণুকে সেন্ট্রোজোম বলে।

সেন্ট্রোজোম কোথায় অবস্থিত

ইন্টারফেজ কোষের কেন্দ্রস্থলে নিউক্লিয়াসের পাশে সেন্ট্রোজোম অবস্থিত।

সেন্ট্রোজোমের গঠন

সেন্ট্রোজোমের গঠন মোটামুটি ৪ ভাগে ভাগ করা যায় । সেগুলি নিম্নরূপ—— চার প্রকার আকৃতির উপাদান দিয়ে সেন্ট্রোজোম গঠিত হয় যথা
১. সেন্ট্রোজোমের বাইরে সমসত্ব সাইটোপ্লাজমীয় ধাত্র বা সেন্ট্রোস্ফিয়ার ———- সেন্ট্রিওলকে বেষ্টন করে একটি ঘন ও নিরেট আবরণ থাকে একেই সেন্ট্রোস্ফিয়ার বলে। কোষ বিভাজনের সময় সেন্ট্রোস্ফিয়ার থেকে অ্যাস্ট্রাল রে বের হয়।
২. সেন্ট্রোজোমের কেন্দ্রের সাইটোপ্লাজমীয় ধাত্র বা কাইনোপ্লাজম
৩. সেন্ট্রোস্ফিয়ার এর চতুর্দিক থেকে বহির্গত রশ্মির মত অনুনালিকা বা অ্যাস্ট্রাল রশ্মি অ্যাস্টার——- প্রো-মেটাফেজ দশায় (মাইটোসিস কোষ বিভাজনে) সেন্ট্রিওল দুটির চারপাশ থেকে এক বিশেষ রশ্মির বিচ্ছুরণ ঘটে একেই অ্যাস্ট্রাল রশ্মি অ্যাস্টার রে বলা হয় এবং
৪. সেন্ট্রিওল —-কাইনোপ্লাজমের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত অনুনালিকা দিয়ে গঠিত দুটি দু’মুখ খোলা ফাপা পিপার মত গঠনকে বলা হয় সেন্ট্রিওল।

সেন্ট্রিওল

প্রতিটি সেন্ট্রোজোমের কেন্দ্রে দুটি করে সেন্ট্রিওল থাকে। প্রতিটি সেন্ট্রিওলে ৯ টি করে ত্রয়ী অনুনালিকা থাকে। বোভেরি ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে সেন্ট্রিওলের নামকরণ করেন। প্রতিটি সেন্ট্রোজোম এর দুটি করে বেলনাকার সেন্ট্রিওল থাকায় একে ডিপ্লোজোমও বলা হয়। সেন্ট্রিওল সেল সেন্টার বলেও পরিচিত। সেন্ট্রিওল দুটি পরস্পর প্রাইস সমকোণে অবস্থান করে। এদের দৈর্ঘ্য সাধারণত ০.৩ থেকে ০.৮ মাইক্রোমিটার এবং ব্যাস ১৫ থেকে ২৫ মাইক্রো মিটার পর্যন্ত হয়। বিজ্ঞানের থ্রেড গোল্ডের বর্ণনা অনুসারে সেন্ট্রিওল এর প্রতিটি অনুনালিকা তিনটি করে অধঃনালিকা দিয়ে গঠিত। অধঃনালিকার ব্যাস ২০০Å থেকে ২৬০Å হয়। পাশাপাশি অবস্থিত অধঃনালিকা তিনটিকেথ্রেড গোল্ডে A, B এবং C বলে চিহ্নিত করেছেন। অধঃনালিকাগুলো অনুনালিকার সঙ্গে তন্তুময় যোজক দিয়ে যুক্ত থাকে।

এই ছিল সেন্ট্রোজোমের গঠন বর্ণনা।

সেন্ট্রোজোমের কাজ গুরুত্ব বা ভূমিকা

সেন্ট্রোজোমের কাজ, গুরুত্ব বা ভূমিকা নিচে আলোচনা করা হল

  • ১. মাইটোসিস কোষ বিভাজনের সময় দ্বিত্ব সেন্ট্রোজোম থেকে মাইক্রোটিউবিউল উৎপন্ন হয় মাইটোটিক স্পিন্ডেল গঠন করে। এই স্পিন্ডলের সাহায্যে বিভাজিত ক্রোমোজোমগুলি কোষের মেরুতে গমন করে।
  • ২. সেন্ট্রোজোম মাইক্রোটিউবিউল গুলির সৃষ্টির সূচনা স্থান হিসেবে কাজ করে।
  • ৩. মাইক্রোটিউবিউল গুলি টিউবিউলিন নামক প্রোটিন এর সাহায্যে প্রলম্বিত হলেও সেন্ট্রোজোম মাইক্রোটিউবিউল গঠিত হতে পারে না।
  • ৪. সেন্ট্রোজোমের অন্তর্গত সেন্ত্রিওল শুক্রাণুর পশ্চাৎ গঠনে সাহায্য করে।
  • ৫. মাকুযন্ত্র সৃষ্টি করে।
  • ৬. ফ্লাজেলা ও সিলিয়া গঠন করে ।

এই ছিল সেন্ট্রোজোমের কাজ, গুরুত্ব বা ভূমিকা।

এস্টার রে কাকে বলে

প্রো-মেটাফেজ দশায় (মাইটোসিস কোষ বিভাজনে) সেন্ট্রিওলের চারপাশ থেকে এক বিশেষ রশ্মি বের হয় । একেই অ্যাস্ট্রাল রশ্মি অ্যাস্টার রে বলা হয়।

সেন্ট্রিওলের কাজ কি

.১. সেন্ট্রোজোমের অন্তর্গত সেন্ত্রিওল শুক্রাণুর পশ্চাৎ গঠনে সাহায্য করে।
২. মাকুযন্ত্র সৃষ্টি করে।
৩. ফ্লাজেলা ও সিলিয়া গঠন করে ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here