‌ ঘনীভবন ও উদাহরণ | লীন তাপ | তাপের একক

1
1301

‌ ঘনীভবন এবং বাষ্পীভবন ও ঘনীভবন এর পার্থক্য

সূচীপত্র দেখতে ক্লিক করুন show

‌ঘনীভবন কি

ঘনীভবনের সংজ্ঞা : কোন পদার্থের বাষ্পীয় অবস্থা থেকে তরলে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে ঘনীভবন বলে।

১. একটি সম্পূর্ণ শুষ্ক কাচের গ্লাসের মধ্যে কিছু বরফের টুকরা রেখে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা যাবে গ্লাসের বাইরের গায়ে বিন্দু বিন্দু জল জমা হয়েছে। বরফের সংস্পর্শে গ্লাসটি ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন গ্লাসটির চারপাশে বাতাসের মধ্যে যে জলীয়বাষ্প থাকে সেই গুলি গ্লাসটির ঠান্ডা এর সংস্পর্শে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে গ্লাসের গায়ে জল জমা হয়।

২. একটি কেটলিতে জল ফুটছে এবং কেটলির মুখ দিয়ে স্টিম বের হচ্ছে। এই অবস্থায় একটি ঠান্ডা কাঁচের প্লেট কেটলির মুখের কাছে ধরলে দেখা যাবে প্লেটের গায়ে বিন্দু বিন্দু জল জমা হচ্ছে। ঠাণ্ডা প্লেটের সংস্পর্শে স্টিমের জলীয়বাষ্প এসে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে জলবিন্দুরূপে জমা হয়।

প্রকৃতির মধ্যে আমাদের আশেপাশে ঘনীভবনের অনেক উদাহরণ ছড়িয়ে আছে

সম্পৃক্ত বাষ্প কাকে বলে

সম্পৃক্ত বাষ্পের সংজ্ঞা : একটা আবদ্ধ পাত্রে জল রাখলে জলের উপরতল থেকে বাষ্পায়নের ফলে জলের অনুগুলি ক্রমশ বেরিয়ে এসে ওই ফাঁকা জায়গাটিতে ভর্তি হতে থাকবে। ফলে ওই ফাঁকা জায়গায় জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ক্রমে বাড়তে থাকবে।

এইভাবে বাড়তে বাড়তে এমন একটা সময় আসবে যখন জল থেকে যতগুলি অনু বেরিয়ে আসে, জলেতলের উপরের অংশ থেকে ঠিক ততগুলি অনু বাষ্পীয় অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় চলে যায়। এইসময় পাত্রে জলের পরিমাণ আর কমে না বা বাষ্পের পরিমাণ আর বাড়ে না। এই অবস্থায় ওই আবদ্ধ পাত্রে জলতলের উপরের বাষ্পকে সম্পৃক্ত বাষ্প বলে। বাষ্পের সম্পৃক্ত অবস্থা উষ্ণতার উপর নির্ভর করে।

শিশির কি

শিশির: শরৎকালে সকালবেলায় ঘাসের উপর অজস্র শিশিরবিন্দু জমে থাকে- সূর্যের কিরণে হীরের মত জ্বল্ জ্বল্ করে। বাতাসের মধ্যে যে জলীয়বাষ্প থাকে, সাধারণ অবস্থায় সেই বাষ্প অসম্পৃক্ত অবস্থায় থাকে।

রাত্রের ঠান্ডায় ভূপৃষ্ঠ ঠান্ডা হলে বাতাসে ঠান্ডা হয়, ফলে বাতাসের আয়তন কমতে থাকে এবং ওর মধ্যে বর্তমান জলীয়বাষ্প দ্বারা ক্রমশ সম্পৃক্ত হতে থাকে। শেষে উষ্ণতা কমতে কমতে এমন একটা উষ্ণতায় আসে, যে উষ্ণতায় বাতাস ওর মধ্যের জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে যায়। এই উষ্ণতাকে শিশিরাঙ্ক বলে।

শিশিরাঙ্ক কি

শিশিরাঙ্কের সংজ্ঞা: যে উষ্ণতায় কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ু ওর মধ্যে উপস্থিত জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়, সেই উষ্ণতাকে ওই বায়ুর শিশিরাঙ্ক বলে।
শিশিরাঙ্কের চেয়ে বায়ুর উষ্ণতা আরো কমে গেলে বায়ুর মধ্য থেকে কিছু পরিমাণ জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ঘাসের উপর তরল রূপে জমে শিশির উৎপন্ন করে।

শিশির জমার শর্ত (ঘনীভবন)

ভালো করে শিশির জমার শর্ত এগুলির উপর নির্ভর করে:

  • ১.মেঘহীন আকাশ: মেঘ না থাকলে ভূপৃষ্ঠ তাড়াতাড়ি তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়ে যায়, তাই বাতাস‌ও তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়।
  • ২. স্থির বাতাস: বাতাস স্থির থাকলে কোন ঠান্ডা বস্তুর সংস্পর্শে বাতাস বেশিক্ষণ থাকার সুযোগ পায়, ফলে আয়তন কমে ওর মধ্যস্থ জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়। বায়ুপ্রবাহ হলে এটা হয় না, ফলে শিশির জমে না।
  • ৩. বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ: বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকলে তাড়াতাড়ি শিশির জমে।
  • ৪. তাপের বিকিরক এবং কুপরিবাহী বস্তুর সংস্পর্শে থাকলে বাতাস তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়, ফলে তাড়াতাড়ি‌ শিশির জমে।
  • ৫. ভূপৃষ্ঠের কাছের বস্তুর উপর বেশি শিশির জমে। যে বস্তুটির উপর শিশির জমে সেটি যদি ভূ-পৃষ্ট থেকে উপরে থাকে তাহলে ওর সংস্পর্শে থাকা বাতাস ঠান্ডা ও ভারী হয়ে নিচে নেমে যাবে, আর ঐ শূন্যস্থান পূর্ণ হবে হালকা উষ্ণ বায়ু দ্বারা, ফলে শিশির জমার মত ঠান্ডা অবস্থার সৃষ্টি হবে না। সেইজন্য গাছের পাতার চেয়ে ঘাসের উপর শিশির বেশী জমে।

মেঘ কি

মেঘের সংজ্ঞা : বাতাসের মধ্যে যে জলীয়বাষ্প থাকে, ভূপৃষ্ঠের অনেক উপরে ঠান্ডায় ওই জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাসের উষ্ণতা ক্রমে কমতে থাকে। এই উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের কম হয়ে গেলেই বাতাসের কিছু জলীয়বাষ্প বাতাসের মধ্যে ভাসমান ধূলিকণার গায়ে জমে জলবিন্দুর আকারে ভেসে বেড়ায়। এইরকম অনেক জলবিন্দু একসঙ্গে জমে মেঘের সৃষ্টি করে।

কুয়াশা কি

কুয়াশার সংজ্ঞা : ভূপৃষ্ঠের উপর অনেকখানি জায়গায় বাতাসের উষ্ণতা কোন কারণে কমে গেলে ওখানকার বাতাস ওর মধ্যে জলীয়বাষ্প দ্বারা ক্রমশ সম্পৃক্ত হতে থাকে। বাতাসের উষ্ণতা শিশিরাঙ্ক এর নিচে নেমে গেলে বাতাস থেকে কিছু পরিমাণ জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা জমে আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায়। একেই কুয়াশা বলে। শীতকালে ভোরের দিকে কুয়াশা হয়। সূর্য উঠার পর উষ্ণতা বাড়লে কুয়াশা অদৃশ্য হয়ে যায়। বড় শহর, কলকারখানা অঞ্চলে সূক্ষ্ম ধূলিকণা বা কয়লার কণা বাতাসে ভাসতে থাকে। এগুলোর ওপর জলীয় বাষ্প জমে কুয়াশা সৃষ্টি হয়। বায়ুপ্রবাহ যত কম হবে কুয়াশাও তত ভাল জমে। সুতরাং দেখা গেলো, মেঘ এবং কুয়াশার উৎপত্তি একই রকম। তফাৎ হল এই যে, মেঘ অনেক উঁচুতে সৃষ্টি হয় আর কুয়াশা সৃষ্টি হয় ভূপৃষ্ঠের উপরে।

শিলাবৃষ্টি কি

শিলাবৃষ্টির সংজ্ঞা : মেঘের জল কণাগুলি পরস্পর মিশে বড় বড় ফোটায় পরিণত হয়, তারপর কোন কারণে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এলে ঐ ফোটাগুলি বরফে পরিণত হয়। তখন ওই বরফ টুকরাগুলি পৃথিবীর বুকে ঝরে পড়তে থাকে- একেই শিলাবৃষ্টি বলে।

লীন তাপ

লীন তাপ কি

লীন তাপ : একই অবস্থায় কোন পদার্থের উপর তাপ প্রয়োগ করলে পদার্থটির উষ্ণতা বাড়ে, আবার পদার্থটি থেকে তাপ নিষ্কাশন করলে উষ্ণতা কমে। সব অবস্থায় কিন্তু এটা হয় না। কোন পদার্থ, এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় যাওয়ার সময় তার শোষিত হয়, না হলে তার বর্জিত হয়- এই তাপ শোষণ বা তাপ বর্জনের সময় বস্তুটির উষ্ণতার কোন পরিবর্তন হয় না। যেমন, তাপ প্রয়োগ করে যখন কোন পদার্থকে কঠিন থেকে তরল অবস্থায় বা তরল অবস্থা থেকে বাষ্পীয় অবস্থায় আনা হয়, কিংবা তাপ নিষ্কাশন করে কোন পদার্থকে বাষ্পীয় ব্যবস্থা থেকে তরল অবস্থা থেকে কঠিন অবস্থায় আনা হয়, তখন কিন্তু পদার্থটির উষ্ণতার কোন পরিবর্তন হয় না। পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনের সময় পদার্থটি কিছু তাপ গ্রহণ বা বর্জন করলেও ওই তাপের বাহ্যিক প্রকাশ ঘটে না। এই তাপ‌ই হল লীন তাপ।

লীন তাপের সংজ্ঞা: স্থির উষ্ণতায় এক ভরের কোন পদার্থের শুধু অবস্থার পরিবর্তন করার জন্য যে পরিমান তাপ প্রয়োগ বা নিষ্কাশন করতে হয়, সেই পরিমাণ তাপকে ঐ পদার্থের ঐ অবস্থার পরিবর্তনের লীন তাপ বলে।

বিভিন্ন অবস্থান্তরের লীন তাপ

বিভিন্ন অবস্থান্তরের লীন তাপ হল-
১. গলনের লীন তাপ ২. বাষ্পীভবনের লীন তাপ ৩. কঠিনীভবনের লীন তাপ এবং ঘনীভবনের লীন তাপ।

কঠিন অবস্থা থেকে তরলে অবস্থান্তর

কঠিন অবস্থা থেকে তরলে অবস্থান্তর: কোন কঠিন পদার্থ যেমন, -5°C উষ্ণতায় রাখা বরফে তাপ প্রয়োগ করলে বরফের উষ্ণতা বাড়তে থাকবে এবং এই উষ্ণতা বৃদ্ধি থার্মোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে মাপা যাবে। বরফের গলনাঙ্কের (প্রমাণ চাপে 0°C) না আসা পর্যন্ত উষ্ণতা বাড়তে থাকবে। বরফের উষ্ণতা0°Cএ এলে দেখা যাবে তাপ দেওয়া সত্ত্বেও উষ্ণতা আর বাড়ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত বরফটি গলে জলে পরিণত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত উষ্ণতা 0°Cএ স্থির হয়ে থাকবে। এই অবস্থায় প্রযুক্ত তাপ বরফের উষ্ণতা বৃদ্ধি না করে ওর অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে ব্যয়িত হয়েছে। এই তাপ‌ই হল বরফের গলনের লীন তাপ

গলনের লীন তাপ:

গলনের লীন তাপের সংজ্ঞা:: একক ভরের কোন পদার্থকে, উষ্ণতার পরিবর্তন না করে কঠিন অবস্থা থেকে সম্পূর্ণরূপে তরল অবস্থায় আনতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয়, সেই তাপকে ওই কঠিনের গলনের লীন তাপ বলে।

বরফের লীন তাপ

বরফের গলনের লীন তাপ 80 ক্যালোরি /গ্রাম বলতে এই বোঝায় যে, প্রমাণ চাপে 0°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম বরফকে 0°Cউষ্ণতায় 1 গ্রাম জলে পরিণত করতে 80 ক্যালোরি তাপের প্রয়োজন হয়। এফ.পি. এস্ পদ্ধতিতে বরফের গলনের লীন তাপ: এফ্. পি. এস্ পদ্ধতিতে বরফের গলনের লীন তাপ=প্রমাণ চাপে 0°C উষ্ণতায় 1 পাউন্ড বরফকে 0°C উষ্ণতায় 1 পাউন্ড জলে পরিণত করতে যত ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট তাপের প্রয়োজন।

এখন 453.6 গ্রাম=এক পাউন্ড, অর্থাৎ 1 গ্রাম=1/453.6 পাউন্ড,
252 ক্যালোরি=1 ব্রি. থা. ই., সুতরাং 80 ক্যালোরি=80/252 ব্রি.থা.ই.
আমরা জানি, 0°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম বরফ 0°C উষ্ণতায় জলে পরিণত হতে প্রয়োজনীয় তাপ=80 ক্যালোরি।
সুতরাং বলা যায় 1/453.6 পাউন্ড বরফকে 0°C উষ্ণতায় জলে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় তাপ=80/252 ব্রি. থা. ই.
অতএব, 1 পাউন্ড বরফকে 0°C উষ্ণতায় জলে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় তাপ=80×453.6/252 ব্রি. থা.ই =144 ব্রি.থা.ই/পাউন্ড

তরল অবস্থা থেকে বাষ্পে অবস্থান্তর

তরল অবস্থা থেকে বাষ্পে অবস্থান্তর: কোন তরল পদার্থ, যেমন- জলে তাপ প্রয়োগ করলে জলের উষ্ণতা ক্রমশ বাড়তে থাকবে এবং এই উষ্ণতা বৃদ্ধি থার্মোমিটার যন্ত্রে ধরা পড়ে।জলের উষ্ণতা এইভাবে বাড়তে বাড়তে যখন স্ফুটনাঙ্কে (প্রমাণ চাপে 100°C) এসে পৌঁছবে তখন জল বাস্পে পরিণত হতে আরম্ভ করে।জলের বাষ্পীভবন আরম্ভ হওয়ার সময় থেকে সমস্ত জল বাস্পে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত তাপ প্রয়োগ করা সত্বেও উষ্ণতা বাড়ে না-স্ফুটনাঙ্কে স্থির থাকে। এই অবস্থায় প্রযুক্ত তাপ জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি না করে ওর অবস্থার পরিবর্তন (তরল থেকে বাষ্পে) করতে ব্যয়িত হয়। এই তাপ‌ই হল বাষ্পীভবনের লীন তাপ।

বাষ্পীভবনের লীন তাপ

বাষ্পীভবনের লীন তাপের সংজ্ঞা: বাষ্পীভবনের লীন তাপ:একক ভরের কোন তরলকে উষ্ণতার পরিবর্তন না করে, তরল অবস্থা থেকে সম্পূর্ণরূপে বাষ্পে পরিণত করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয়, সেই তাপকে ওই তরলের বাষ্পীভবনের লীন তাপ বলে।

স্টিমের লীন তাপ 537 ক্যালোরি/গ্রাম-বলতে এই বুঝায় যে,প্রমাণ চাপে 100°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম জলকে ওই উষ্ণতায় 1 গ্রাম বাষ্পে পরিণত করতে 537 ক্যালোরি তাপের প্রয়োজন।

এফ্. পি .এস্ পদ্ধতিতে স্টিমের লীন তাপ=537×453.6/252
=966.6 ব্রি.থা.ই./পাউন্ড

লীন তাপের একক

লীন তাপের স্বীকৃত আন্তর্জাতিক একক হল জুল/ কিলোগ্রাম। পদার্থের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন পদার্থের লীন তাপ বিভিন্ন।

তাপের একক

সি. জি. এস্. পদ্ধতিতে তাপের একক।

ক্যালোরি: 1 গ্রাম বিশুদ্ধ জলের উষ্ণতা 0°C বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন, তাকে এক ক্যালরি বলে। ক্যালোরি হল সি. জি. এস্. পদ্ধতিতে তাপের একক।

ব্রিটিশ থার্মাল পদ্ধতিতে তাপের একক

ব্রিটিশ থার্মাল একক: এক পাউন্ড বিশুদ্ধ জলের উষ্ণতা ১°C ফারেনহাইট বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন, তাকে এক ব্রিটিশ থার্মাল একক বলে।

এক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট=1পা.×1×1°F
=453.6 গ্রাম×1×5°/9C
=252 ক্যালোরি।
এক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট=252 ক্যালোরি।

ঘনীভবন ও বাষ্পীভবনের মধ্যে পার্থক্য

ঘনীভবন ও বাষ্পীভবনের পার্থক্য
ঘনীভবন ও বাষ্পীভবনের পার্থক্য

ঘনীভবন ও বাষ্পীভবনের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচিত হল—

ঘনীভবনবাষ্পীভবন
কোন পদার্থের বাষ্পীয় অবস্থা থেকে তরলে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে ঘনীভবন বলে।তরল পদার্থকে বাষ্পে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে বাষ্পীভবন বলে
ঘনীভবন প্রক্রিয়াতে তাপের বর্জন ঘটে।বাষ্পীভবন প্রক্রিয়াতে তাপের গ্রহণ হয়।
বাষ্পীভবন দুই পদ্ধতির মাধ্যমে হয় বাষ্পায়ন এবং স্ফুটন ।জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পূর্ণ সম্পৃক্ত হওয়ার ফলে ঘনীভবন ঘটে।
ঘনীভবন ও বাষ্পীভবনের মধ্যে পার্থক্য

এই ছিল ঘনীভবন ও বাষ্পীভবনের মধ্যে পার্থক্য।

স্টিম বর্ণহীন গ্যাসীয় পদার্থ, কিন্তু কেটলিতে জল ফোটালে যে স্টিম বের হয় তার বর্ণ সাদা হয় কেন?

স্টিম বর্ণহীন গ্যাসীয় পদার্থ, কিন্তু কেটলিতে জল ফোটালে যে স্টিম বের হয় তার বর্ণ সাদা হয় কারণ হলো বর্ণহীন স্টিম নলের মুখ থেকে বেরিয়ে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে কিছু স্টিম ঘনীভূত হয়ে খুব ছোট ছোট জল কণায় পরিণত হয়ে বাতাসে ভাসতে থাকে। এই গুলির উপর আলো পড়ে সাদা দেখায়।

সন্ধ্যাবেলায় শিশির জমে না কেন?

সন্ধ্যাবেলায় শিশির জমে না কারণ হলো সারাদিন সূর্যের তাপ পেয়ে ভূপৃষ্ঠ গরম হয়ে ওঠে এবং ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বাতাস‌ও গরম হয়ে ওঠে, ফলে ভূপৃষ্ঠ ঠান্ডা হতে বেশী সময় লাগে। সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে ভূপৃষ্ঠ ঠান্ডা হয় না, ফলে ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের নিচে নামে না, তাই সন্ধ্যা বেলায় শিশির পড়ে না।

কিছু পরিমাণ জলকে 0°C উষ্ণতায় বরফ দিয়ে সম্পূর্ণ ঢেকে রাখলেও ওই জল জমে বরফ হয় না কেন? অথবা এক টুকরা বরফের মধ্যে গর্ত করে ওর মধ্যে জল রাখলে জল জমে বরফ হয় না কেন?

কিছু পরিমাণ জলকে 0°C উষ্ণতায় বরফ দিয়ে সম্পূর্ণ ঢেকে রাখলেও ওই জল জমে বরফ হয় না কেন? অথবা এক টুকরা বরফের মধ্যে গর্ত করে ওর মধ্যে জল রাখলে জল জমে বরফ হয় না কারণ হলো ওই জল যে তাপ বর্জন করবে বরফ ওই তাপ গ্রহণ করে গলতে থাকবে। কিছুক্ষণ পর এক সময় জলের উষ্ণতা বরফের সংস্পর্শে কমে 0°C এলে বরফ এবং জলের মধ্যে উষ্ণতার পার্থক্য না থাকায় ওই জল থেকে জল জমার জন্য প্রয়োজনীয় লীন তাপ, বরফ আর টেনে নিতে পারবে না। এখন প্রতি গ্রাম জল থেকে 80 ক্যালোরি তাপ না বের হলে জল জমে বরফ হয় না- তাই ওই জল বরফে পরিণত হয় না।

ফুটন্ত জল এবং স্টিম উভয়ের উষ্ণতা 100°C, তবুও ফুটন্ত জলের চেয়ে একটি স্টীমে হাত দিলে হাত বেশি পুড়ে যায় কেন?

ফুটন্ত জল এবং স্টিম উভয়ের উষ্ণতা 100°C, তবুও ফুটন্ত জলের চেয়ে একটি স্টীমে হাত দিলে হাত বেশি পুড়ে যায় ।দেখা যায় 100°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম জল 537 ক্যালোরি তাপ গ্রহণ করে স্টীমে পরিণত হয়। সুতরাং 100°C উষ্ণতায় কোন পরিমাণ জলে মোট যে তার থাকে, 100°C উষ্ণতায় ওই পরিমাণ স্টীমের প্রতি গ্রামে 537 ক্যালোরি তাপ বেশি থাকে।সেই জন্য দেখা যায় ফুটন্ত জলে হাত দিলে যতটা পুড়ে,স্টীমে হাত দিলে হাত তার চেয়ে আরো বেশি পুড়ে যায়।

100°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম জলে 100°C উষ্ণতায় স্টিম চালনা করলে, জল স্টীমে পরিণত হয় না কেন?

100°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম জলে 100°C উষ্ণতায় স্টিম চালনা করলে, জল স্টীমে পরিণত হয় না কারণ, 1 গ্রাম জলকে স্টীমে পরিণত করতে আরও 537 ক্যালোরি তাপ দরকার। যে স্টিম জলের মধ্যে যাচ্ছে, সেই স্টীম প্রতি গ্রাম 537 ক্যালোরি তাপ ছেড়ে, নিজেই জলে পরিণত হয়। অপরপক্ষে, 1 গ্রাম জল ঐ তাপ নিয়ে আবার ঐ 1 গ্রাম স্টীমে পরিণত হয়। সুতরাং বাড়তি স্টিম আর তৈরি হয় না।

0°C উষ্ণতায় জলের চেয়ে 0°C উষ্ণতায় বরফ বেশি ঠান্ডা বোধ হয় কেন?

0°C উষ্ণতায় জলের চেয়ে 0°C উষ্ণতায় বরফ বেশি ঠান্ডা বোধ হয় কারন 0°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম বরফের মধ্যে যে পরিমান তাপ থাকে, তার সঙ্গে আরো 80 ক্যালোরি তাপ যোগ করলে 1 গ্রাম বরফ 0°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম জলে পরিণত হবে। তাহলে বোঝা গেল, 0°Cএ 1 গ্রাম বরফে যে পরিমান তাপ থাকে 0°C উষ্ণতায় 1 গ্রাম জলে তার চেয়ে 80 ক্যালোরি তাপ বেশি থাকে। তাই 0°C উষ্ণতায় 0°C উষ্ণতায় জল উষ্ণতর বলে মনে হয়।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here